”আকাশের চাঁদ তুমি জমিনের ফুল”

”আসিফ আকবর”

আমার অফিসে নিজে বসার চেয়ারটা দু’তিনজন মানুষের জন্য ছেড়ে দেই । যারা পরম শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার তারা আমার চেয়ারে বসলে আমার খুবই ভালো লাগে, আমিও পাশে বসে থাকি। লাকী ভাইকে ওখানেই বসতে বললাম, তিনি দ্বিধাহীন চিত্তে আমার চেয়ারটায় বসলেন । এতে দুটো বিষয় প্রমানিত হল, প্রথমত- লাকী ভাইয়ের কাছে সব চেয়ার একই। দ্বিতীয়ত- আমিও নিশ্চিন্ত হলাম তিনি আমার উপর বিরক্ত নন। এবার কাজ করার ক্ষেত্রে আর কোন দ্বিধা রইলোনা ।
লাকী ভাই কিছুক্ষন বসলেন, তারপর উঠে চলে গেলেন রুমের আরেক প্রান্তে রাখা এক্যুইষ্টিক গীটারটার কাছে । গীটার হাতে নিয়ে চেয়ার পা দিয়ে প্রায় ৩০/৪০ মিনিট নিজের মত করে বাজালেন খুবই আলতো সাউন্ডে। আমার আবার চড়ুই পাখীর মত অস্থিরতা, একবার রুমে ঢুকি আবার বের হই। পাশের রুমে গিয়ে একটু পর পর বিয়ারে চুমুক দিয়ে আসি । একসময় তিনি এসে বসলেন, হাতে গীটার । আমাকে বললেন – তোমার যে ফিগার তাতে হাতে একটা গীটার থাকলে অনেক ভালো লাগবে, গাইতেও সুবিধা হবে, আমি তোমাকে শিখিয়ে দেবো । মনে মনে প্রমাদ গুনলাম- এবার গীটার শিখতে হবে, মহাটেনশন !!!
লাকী ভাই বললেন – বাংলাদেশে বা কলকাতায় যে ধরনের মিউজিক হচ্ছে, এটাকে একটু পরির্বতন করে আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে তোমাকে গাইতে হবে। চলো তুমি আমি মিলে একটা ব্যান্ড করি, তাতে আমরা কলকাতার বাংলা গানকেও ডমিনেট করতে পারবো, বাংলাদেশ তো আছেই । হু হ্যাঁ করে যাচ্ছি, রাত বাজে প্রায় দশটা, উনার সামনে থেকে নড়তে পারছিনা । আলাপ তো আরো করা যাবে, আমাকে কি গান দিবেন, সেই প্রসঙ্গ কখন উঠবে, এই আশায় চড়ুই পাখী থেকে তীর্থের কাক হয়ে গেলাম , সেই মাহেন্দ্রাক্ষন আসেনা। পুরুষ শাসিত অফিস আমার, চা-কফির এন্তেজাম মুশকিল । লাকী ভাইও চা-কফি পছন্দ করেন বলে মনে হলোনা। এদিকে সময় বয়ে যাচ্ছে, লাকী ভাইকে বেয়াদ্দপের মত বলেই ফেললাম – ভাই বিয়ার খাবেন নাকি !! গম্ভীরভাবে তাকালেন, ভয় পেয়ে গেলাম, আবার ফাউল করে ফেললাম নাতো !! তিনি বললেন খাওয়া যেতে পারে । বিয়ার খেলাম, আড্ডা দিলাম, উনার ব্যক্তিগত নানান বিষয়ে কথা বললেন । যাওয়ার আগে জানালেন আগামী সিটিং এ ‘ আকাশের চাঁদ তুমি জমিনের ফুল’ গানটি রিহার্সাল করাতে আসবেন । আবারো অপেক্ষায় রইলাম, আপনারাও একটু অপেক্ষায় থাকুন …………
চলবে ……
আসিফ আকবরের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া