তারকার পরিচিতি
আজ মরমী শিল্পী আব্দুল আলীমের জন্মদিন
Published
5 years agoon

সৃজনমিউজিক প্রতিবেদক :
উপ মহাদেশের প্রখ্যাত লোক সঙ্গীত শিল্পী আব্দুল আলীমের ৮৬তম জন্ম বার্ষিকী। বাংলা গানের এই কিংবদন্তি শিল্পী ১৯৩১ সালের ২৭ শে জুলাই পশ্চিম বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি গ্রামোফোন ( কলের গান) দেখে বিস্মিত হয়ে যান।মনের মধ্যে লালন করতে থাকেন কি করে ঐ গ্রামোফোনের গান গাওয়া যায়। ঐ সময় কলের গান ছিল মহা বিস্ময়! প্রতিদিন তিনি চাচার বাড়িতে গান শুনতে যেতেন। উল্লেখ্য ঐ কলের গানটি ছিল তার দূরসম্পর্কের এক চাচার। কিন্তু যে হবেন লোক সঙ্গীত সম্রাট তার কি আর পড়াশোনায় মন বসে? তাই তো স্কুল তাকে ধরে রাখতে পারেনি বেশিদিন। কিশোর বয়সেই শুরু করলেন সঙ্গীতচর্চা। আবদুল আলীমের নিজ গ্রামেরই সঙ্গীত শিক্ষক সৈয়দ গোলাম ওলির কাছে তালিম নিতে শুরু করেন। ওস্তাদ তাঁর ধারণ ক্ষমতা নিরীক্ষা করে খুবই আশান্বিত হলেন।
গ্রামের সকল পালা পার্বণে ক্ষুদে আব্দুল আলীম এর ডাক পড়তো। তারা ক্ষুদে ঐ শিল্পীর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যেতেন। আব্দুল আলীম যখন গান শুনিয়ে গ্রামের সকলের মনমাতাতে লাগলেন সেই সময় সৈয়দ গোলাম অলি তাকে কোলকাতায় নিয়ে যান। কিছু দিন কোলকাতা থাকার পর আবারো ছুটে গেলেন তার ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় পল্লীগ্রাম তালিবপুরে। অজ পাড়া ঐ গায়ে সঙ্গীত শেখবার কোন সুযোগ না থাকায় তার বড় ভাই শেখ হাবিব আলী এক প্রকার জোর করে ধরে নিয়ে গেলেন তাকে কোলকাতায়।
১৯৪২ সাল। উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়েছে। শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক এলেন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায়। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বড় ভাই শেখ হাবিব আলী আব্দুল আলীমকে নিয়ে গেলেন সেই অনুষ্ঠানে। আব্দুল আলীমের অজ্ঞাতে বড় ভাই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কাছে তাঁর নাম দিয়ে ছিলেন গান গাইবার জন্য। এক সময় মঞ্চ থেকে আবদুল আলীমের নাম ঘোষণা করা হলো। শিল্পী ধীর পায়ে মঞ্চে এসে গান ধরলেন, ‘সদা মন চাহে মদিনা যাবো।’ মঞ্চে বসে আবদুল আলীমের গান শুনে শেরে-বাংলা শিশুর মতো কেঁদে ফেললেন। কিশোর আলীমকে জড়িয়ে নিলেন তাঁর বুকে। উৎসাহ দিলেন, দোয়া করলেন এবং তখনই বাজারে গিয়ে পাজামা, পাঞ্জাবী, জুতা, পুটি, মোজা সব কিনে দিলেন।
এরপর একদিন গীতিকার মোঃ সুলতান কলকাতায় মেগাফোন কোম্পানীতে নিয়ে গেলেন আবদুল আলীমকে। সেখানে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কবি নজরুল শিল্পীর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে রেকর্ড কোম্পানীর ট্রেনার ধীরেন দাসকে আবদুল আলীমের গান রেকর্ড করার নির্দেশ দিলেন। ১৯৪৩ সালে মোঃ সুলতান রচিত দু’টি ইসলামী গান আবদুল আলীম রেকর্ড করলেন। গান দু’টি হলো- (১) ‘আফতাব ঐ বসলো পাটে আঁধার এলো ছেয়ে ও চল ফিরে চল মা হালিমা আছেরে পথ চেয়ে।’ (২) ‘তোর মোস্তফাকে দেনা মাগো, সঙ্গে লয়ে যাই, মোদের সাথে মেষ চারণে ময়দানে ভয় নাই।’
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের একমাস পূর্বে আবদুল আলীম কলকাতা ছেড়ে গ্রামের বাড়ীতে চলে এলেন। ঐ বছরেই ডিসেম্বর মাসে ঢাকা এলেন। পরের বছর ঢাকা বেতারে অডিশন দিলেন। অডিশনে পাশ করলেন। ১৯৪৮ সালের আগষ্ট মাসের ৯ তারিখে তিনি বেতারে প্রথম গাইলেন, ‘ও মুর্শিদ পথ দেখাইয়া দাও।’ গানটির গীতিকার ও সুরকারঃ মমতাজ আলী খান। এরপর পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের সাথে আবদুল আলীমের পরিচয় হয়।

মরমী শিল্পী আব্দুল আলীম
কবি জসীম উদ্দিন তাঁকে পাঠালেন জিন্দাবাহার ২য় লেনের ৪১ নম্বর বাড়ীতে। একসময় দেশের বরেণ্য সঙ্গীত গুণী শিল্পীরা এখানে থাকতেন। এখানে তিনি প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ মমতাজ আলী খানের কাছে তালিম গ্রহণ করেন। মমতাজ আলী খান আবদুল আলীমকে পল্লী গানের জগতে নিয়ে এলেন। পরবর্তীতে তিনি কানাই শীলের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন।
গান শেখার ক্ষেত্রে আর যাঁরা তাঁকে সব সময় সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়েছেন- তাঁদের মধ্যে বেদার উদ্দিন আহমেদ, আবদুল লতিফ, শমশের আলী, হাসান আলী খান, মোঃ ওসমান খান, আবদুল হালিম চৌধুরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। লোকসঙ্গীতের অমর কণ্ঠশিল্পী মরহুম আববাস উদ্দিনের পরামর্শক্রমে তিনি ওস্তাদ মোঃ হোসেন খসরুর কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম গ্রহণ করেন। তিনি পাবলিসিটি ডিপার্টমেন্টে বেশ কিছুদিন চাকুরীও করেন।
১৯৫১-৫৩ সালে আবদুল আলীম কলকাতায় বঙ্গীয় সাংস্কৃতিক সম্মেলনে গান গেয়ে বিদেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন। এ সময় পল্লী গানের জগতে শিল্পীর সুখ্যাতি শীর্ষচূড়ায়। তিনি ১৯৬২ সালে বার্মায় অনুষ্ঠিত ত্রক্ষীয় সঙ্গীত সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করেন। বার্মায় তখন অনেকদিন যাবৎ ভীষণ খরা চলছে। গরমে মানুষের প্রাণ বড়ই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আকাশে খন্ড খন্ড মেঘের আনাগোনা। শিল্পী অন্যান্যদের সাথে মঞ্চে উঠলেন গান গাইতে। গান ধরলেন- ‘আল্লা মেঘ দে পানি দে।’ কি আশ্চার্য! গান শেষ হতেই মুষলধারে বৃষ্টি নামলো।

আব্দুল আলীমের ৩ সন্তান
অনুষ্ঠানে বার্মার জনৈক মন্ত্রী বললেন, “আবদুল আলীম আমাদের জন্য বৃষ্টি সাথে করে এনেছেন।” তখন থেকেই শিল্পী বার্মার জনগণের নয়ন মণি হয়ে আছেন। সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে তিনি ১৯৬৩ সালে রাশিয়া এবং ১৯৬৬ সালে চীন সফর করেন। এই দুটি দেশে তিনি পল্লীগান পরিবেশন করে দেশের জন্য প্রচুর সুখ্যাতি অর্জন করেন। বিদেশে বাংলাদেশের পল্লীগানের মান বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে আবদুল আলীমের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বেতার ও টেলিভিশন ছাড়াও অসংখ্য ছায়াছবিতে গান করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম ছবি ‘মুখ ও মুখোশ’-এ কণ্ঠ দেন। এছাড়া আজান, রূপবান, জোয়ার এলো, শীত বিকেল, এদেশ তোমার আমার, কাগজের নৌকা, নবাব সিরাজউদ্দৌলা (বাংলা ও উর্দু), সাত ভাই চম্পা, দস্যুরাণী, সুজন সখি প্রভৃতি অসংখ্য ছবিতে কণ্ঠ দেন।
১৯৬০ সালে গ্রামোফোন কোম্পানী প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তাঁর প্রথম গান ‘প্রেমের মরা জলে ডুবে না’ ও ‘অসময় বাঁশী বাজায়’ এবং পরবর্তীতে ‘হলুদিয়া পাখী’, ‘দুয়রে আইসাছে পাখি’, ‘নাইয়ারে নায়ে বাদাম তুইলা’, ‘এই যে দুনিয়া কিসেরও লাগিয়া’, ‘পরের জাগা পরের জমিন’ প্রভৃতি গান অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি দেশের প্রথিতযশা গীতিকার ও সুরকারদের গান গেয়েছেন, তাদের মধ্যে লালনশাহ, হাসন রাজা, জসীমউদ্দিন, আবদুল লতিফ, মমতাজ আলী খান, শমশের আলী, সিরাজুল ইসলাম, কানাইশীল, মন মোহন দত্ত প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় ৫০০ গান রেকর্ড হয়েছে। এছাড়া বেতারে স্টুডিও রেকর্ডে ও প্রচুর গান আছে। বাংলাদেশ গ্রামোফোন কোম্পানী (ঢাকা রেকর্ড) শিল্পীর একখানা লংপ্লে রেকর্ড বের করেছে।
আবদুল আলীম জীবদ্দশায় ও মরণোত্তর বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন। এরমধ্যে একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার ও স্বাধীনতা পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। তিনি সঙ্গীত কলেজের লোকসঙ্গীত বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ছিলেন। তিনি অনেক ছাত্র/ছাত্রীকে গান শিখিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মোঃ আবদুল হাশেম (অধ্যাপক, বেতার, টিভি শিল্পী বাংলা বিভাগ, কবীর হাট কলেজ), ইন্দ্রমোহন রাজবংশী (বেতার, টেলিভিশনের কণ্ঠশিল্পী), আবদুল করিম খান (বেতার ও টেলিভিশনের কন্ঠ শিল্পী), মোশতাক তালুকদার ( বেতার ও টেলিভিশনের কন্ঠ শিল্পী), শহীদুজ্জামান ও রুকশানা হক প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
আজ এই মরমী শিল্পীর জন্ম দিনে সৃজনমিউজিক বিডি ডটকমের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী।
Dhaka Attack Unreleased Song
The Basics of Writing a Custom Research Paper
Study Managing
Amet amet dolore aliquam quiquia etincidunt.
How To Pick a Good Photo Editor
Board Portal Software for holding meetings distantly
Things to Consider When Writing a Research Paper
Ready to Go for Virtual Boardroom? Know this First!
Mail Order Brides to be
Custom Research Paper Mistakes
Latina Brides ᐈ Mail

কাজী শুভর গানে কলকাতার পল্লবী কর ও প্রেম কাজী (ভিডিও)

ভালোবাসা দিবসে দুই বাংলার মিশ্রণে ‘প্রাণের গীটার’

মাহফুজ ইমরানের এক বছরের সাধনার ফসল ‘প্রাণের গীটার’ (ভিডিও)

শাহজাহান শুভ’র ‘কথামালা’ গান অন্তর্জালে

শাকিব খানের কাছে ক্ষমা চাইলেন জায়েদ খান

রোহিঙ্গাদের নিয়ে গান গাইলো অবস্কিওর

প্রকাশ হলো ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির অরিজিত সিংয়ের সেই গান

শাকিরার নতুন মিউজিক ভিডিও ‘পেরো ফিয়েল’

তানজীব সারোয়ারের নতুন গান
