এসএসসি পরীক্ষা বন্ধুত্বে খড়গ চালায় : আসিফ

সৃজনমিউজিক প্রতিবেদক :

হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমার-আমার অন্য দিনের ভোরে’। হৃদয়ের সবটুকু আবেগ নিংড়ে, সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে যে জায়গায় কথা বলা যায়, তা হলো বন্ধু আড্ডা। আর এই আড্ডাটা যদি হয় বন্ধুদের একটি বিশেষ দিনে, তাহলে কোনো কথাই নেই। আজ ৭ই আগষ্ট বিশ্ব বন্ধু দিবস। প্রতিবছর আগস্ট মাসের প্রথম রোববার আন্তর্জাতিকভাবে বন্ধু দিবস পালিত হয়। বন্ধু দিবস উপলক্ষে আজ বাংলাগানের যুবরাজ আসিফ আকবর তার ফেসবুক পেজে একটি লেখা শেয়ার করেছেন। লেখার সঙ্গে স্কুল বন্ধু হাফিজের সঙ্গে একটি ছবিও শেয়ার করেছেন। বলেছেন স্কুল বন্ধুদের নানা কথা। সৃজনমিউজিক বিডি ডটকমের পাঠকদের জন্য আসিফ আকবরের লেখাটি প্রকাশ করা হলো।

‌

‘SSC পরীক্ষা বন্ধু জগতের জন্য অভিশাপ। সাইন্স আর্টস কমার্সের বিভাজনে স্কুল বন্ধুরা আলাদা হওয়া শুরু করে, অথচ এই স্কুল বন্ধুরাই কালের পরীক্ষায় সেরা বন্ধু হয়ে থাকে। কুমিল্লা জিলা স্কুলে আমরা তিন সেকশন মিলিয়ে প্রায় একশো আশি জন বন্ধু প্রত্যক্ষ পরোক্ষ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছি। অনেকে মারা গেছে, অনেকে যোগাযোগের বাইরে আর কারো কারো কাজের ক্ষেত্র বিশেষায়িত হওয়ায় যোগাযোগ সীমিত। খেলা গান বিতর্ক আর আড্ডার কারনে ক্লাসের তিন সেকশনের বন্ধুদের সাথে আমার ভালো যোগাযোগ ছিলো।

কুমিল্লা জিলা স্কুলের বিশাল ক্যাম্পাস, ক্লাস সিক্সে ভর্তি হওয়া নতুন ছাত্র আমি, গুলবাগিচা স্কুল থেকে এসেছি। ঐ স্কুলের বন্ধুদের বড় অংশ জোড় বিজোড় রোল পদ্ধতির কারনে অন্য সেকশনে পড়ে গেলো। অন্য স্কুলের নতুন বন্ধুদের সাথে খাপ খাওয়াতেই চলে যায় একটি বছর। অচেনা একেকজন বন্ধু হয়ে ওঠে প্রিয় বন্ধু। জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় পার হতে থাকে তাদের সঙ্গে। SSC পরীক্ষা এসে খড়গ চালায় সেই বন্ধুত্বে।

আমরা সবাই সাদা শার্ট প্যান্ট পরলেও হাফিজ অনুমতি পেয়েছিলো সাদা পাজামা পাঞ্জাবী এবং টুপি পরার। শান্তশিষ্ট হাফিজের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার প্রথম কারন আরবী। আরবী পরীক্ষার বৈতরণী পার হতে হাফিজের সাহায্য না পেলে সোহরাব স্যারের হাত থেকে রক্ষা ছিলোনা। SSC পরীক্ষার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,সাত আট বছর আগে আবার মিলিত হয়েছি, সে সিমেন্স বাংলাদেশ এ কর্মরত।

অফিস শেষে কিংবা ছুটির দিনে হাফিজ আমার অফিসে আসবেই। হাফিজ সবসময় বিনয়ের অবতার, আমি তার ভালবাসার উষ্ণতা টের পাই, সে আমার উপর ভরসা এবং বিশ্বাস রাখে। নিজের ভালোলাগা থেকে সবসময় ব্যস্ত আমার খেয়াল রাখার চেষ্টায়, অতি সাবধানতায় ভুল করতেই থাকে, তার চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেই, এটাই তার শাস্তি, সেও সারেন্ডারের ভঙ্গীতে কাউন্টার হাসি দিয়ে ইজি হয়ে যায়। আমার সব জিলা স্কুল বন্ধুদের স্মৃতি তাজা রাখে হাফিজ। তার সরলতার মুগ্ধতায় বারবার ফিরে যাই জিলা স্কুলের সবুজ ক্যাম্পাসে।

হাফিজ অফিসের কাজে এখন ভিয়েতনাম অবস্থান করছে। তোকে এবং তোদেরকে সবসময় মিস করি শালারা। যে যেখানেই আছিস ভাল থাকিস, পাশে থাকিস । গালিগালাজ এবং ভালবাসা অবিরাম …