সাক্ষাৎকার
ওপার বাংলার সুরের প্রাণ ভ্রমরা মধু মুখার্জী
Published
4 years agoon

রিপন চৌধুরী :
অবিনশ্বর অনুভুতির প্রতিরূপ সঙ্গীত। বাংলা গানের বিচিত্র সুর ও বাণীর বিপুল ভাণ্ডার থেকে যারা সঙ্গীত সূধা পান করে এর মাহাত্ম বুঝেছেন, তাঁদেরই একজন মধু মুখার্জী। ওপার বাংলার ব্যস্ততম সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার। যার মনোহরণকারী সুর বা সঙ্গীতের সৃষ্টি বাংলা গানের বিপুল ভাণ্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করে চলেছে। সুরের বিমূর্ততাকে ভেঙ্গে মূর্ত করে তুলেছেন সবার কাছে।
কোলকাতার কাছে হাওড়া জেলার লিলুয়াতে সম্ভ্রান্ত মুখার্জী পরিবারে জন্ম নেয়া এই মানুষটি ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেছেন। সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব সলির চৌধুরীর সাথে সহকারী হিসাবে কাজ
করেছেন। আশা ভোঁসলের নজরুল সঙ্গীত, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ঊষা উত্থুপ, ইন্দ্রানী সেন, মিতালী মুখার্জী প্রমুখের অ্যালবামে সঙ্গীত পরিচালনা করেন মধু মুখার্জী।
আবিস্কার করেন নচিকেতা ও শিলাজিতের মতো অসাধারণ প্রতিভাদের। দুই বাংলার জনপ্রিয় চলচ্চিত্র হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গীত পরিচালনা তাকে আলোচনার এক অনন্য স্থানে নিয়ে যায়। মধু মুখার্জী হয়ে ওঠার আগে তিনি কাজ করেন আনন্দ শংকরের অর্কেষ্ট্রা দলে। বাংলাদেশের আলাউদ্দিন আলীর কোলকাতায় যত সঙ্গীত ধারণের কাজ হয়েছে প্রায় সব ক’টিতেই তিনি কাজ করেছেন। বাজিয়েছেন রুনা লায়লার গানেও। হিন্দি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করলেও শেষ পর্যন্ত বোম্বের সঙ্গীত ছেড়ে তিনি বাংলার টানে কোলকাতায় আবার ফিরে আসেন। পদক আর সম্মাননার ঝুলিতে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৬ সালে পশ্চিম বাংলার ‘বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর’ পদক ও শিলাজিতের অ্যালবামের জন্য ‘গোল্ডেন ডিস্ক ও প্লটিনাম ডিস্ক’ পদক প্রাপ্ত হন। বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
কোলকাতার বেচুলাল রোড পদ্মপুকুরের বাসায় মধু মুখার্জী সৃজনমিউজিকবিডির বিশেষ প্রতিনিধি রিপন চৌধুরীকে দেন বিশেষ সাক্ষাতকার। সঙ্গীত জীবনের শুরু আর অনুপ্রেরণার কথা-
খুব ছোট বেলা থেকেই সঙ্গীতের সাথে আমার পরিচয়। আমরা দাদা ভালো সেতার বাজাতেন। বাবা-মা নাটকে অভিনয় করতেন। প্রকৃত অর্থে একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেই আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। মধু মুখার্জীর শুরুটা হয় তবলা দিয়ে। পণ্ডিত কিশোরী মোহন প্রামানিকের কাছে তাঁর হাতে খড়ি। একটু বড় হবার পর স্টিল গিটার (হাওয়াইন গিটার) শেখা শুরু করেন শ্রী সৌমেন মুখার্জীর কাছে। পরবর্তী সময়ে স্কুল জীবনের শেষ দিকে বাংলাদেশের লাকী আখন্দ্ ও হ্যাপী আখন্দের সাথে পরিচয় ঘটে পশ্চিম বঙ্গের দূর্গাপুরের একটি অনুষ্ঠানে। তাঁদের গিটার বাদন ও গানে মুগ্ধ হয়ে যান মধু মুখার্জী।
এ প্রসঙ্গে মধু মুখার্জী স্মৃতি চারণ করে বলেন, স্প্যানিশ গিটার শেখার ব্যাপারে হ্যাপীর অবদান আমি ভুলবোনা কোনদিনও। আমার সারা জীবনের অনুপ্রেরণা লাকী আখন্দ্ ও হ্যাপী আখন্দ্। ওঁদের সঙ্গীতের গভীরতা আমাকে এতটাই বেশী টেনেছে যে, সে সময় আমি ওঁদের সাথে গৃহত্যাগী হতেও দ্বিধা করিনি।
হয়তো সেটাই আমার টার্নিং পয়েন্ট। পথ চলা শুরু, যা আজো থেমে নেই। আরেক জনের নাম আমাকে উল্লেখ করতেই হবে তিনি আলাউদ্দিন আলী। যাঁর সাথে আমি প্রচুর কাজ করেছি, আর সঙ্গীত সৃষ্টির বৈচিত্রে মোহিত হয়ে গেছি। প্রেরণার কথা বলতে গিয়ে মধু মুখার্জী বলেন, ভারতীয় সঙ্গীতে পঞ্চম
দা’র (আর.ডি.বর্মন) আবর্ত থেকে এখনো মনে হয় কেউ বের হতে পারেনি, আমার ভেতরেও তিনি বাস করেন। স্ট্রিং, বিটলস্, জোয়ান বায়াজ এদের গানও আমাকে প্রাণিত করে। একটা সময়ে আমি ‘প্রতিষ্ঠান বিরোধী’ মতবাদের সাথে জড়িয়ে পড়ি। সে সময়টাতেও সঙ্গীত সৃষ্টির অনেক ক্ষেত্র আমি পেয়েছি।
বাংলাদেশের গান প্রসঙ্গে মধু মুখার্জী বলেন, দুই বাংলার লোক সঙ্গীত বড়ই শক্তিশালী এ কথা অস্বীকারের কোন উপায় নেই। তারপরও আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশের লোকগান সোঁদা মাটির গন্ধের মতই বিশুদ্ধতায় ভরা। মাটি ও মানুষের সাথে মাখামাখির মতই সহবস্থান করে। ফলে লোক গানের খোঁজ রাখি বললেন মধু মুখার্জী। রুনা আপার (রুনা লায়লা) গান ছাড়া আর কারো গান তেমন ভাবে শোনা হয়নি বা সুযোগটাও ছিলোনা। দু’টি দেশ আলাদা হলেও আমরা একই ভাষায় কথা বলি,একই সুরে গাই, একই সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠি। তাই বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণের খোঁজ রাখার আগ্রহটা কম নয়। বাংলাদেশের অর্ণব আর বাপ্পা মজুমদারের কাজ ভালো লাগে। এছাড়া, ব্যান্ডের গান অনেক শোনা হয়।
https://www.youtube.com/watch?v=lsfejrt4VS0
দুই বাংলার সঙ্গীত নিয়ে ভাবনা –
বাংলা গানের বিপুল ভান্ডার অপরূপ বৈচিত্রে ভরা। অদ্যাবধি দুই বাংলায় এতো বিচিত্র সুর ও বাণীর চিত্রকল্প রচিত হয়েছে যা বিস্ময়কর। এ রকম প্রসঙ্গ টেনেই মধু মুখার্জী বলেন, শুধু ভাবনা থাকলেই চলবে না, তার বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কারণেই হোক, দু’বাংলার সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনা এক হলেও বিনিময়ের জায়গাটায় একটা শূণ্যতা বিরাজ করছে, বিশেষ করে দেশ বিভাগের পর থেকে। বন্ধুত্ব ও ভাতৃত্বপূর্ণ জায়গা থেকে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও যোগাযোগটা বাড়লে দু’বাংলাই উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশের সঙ্গীত নিয়ে আগ্রহ-
মধু মুখার্জী সঙ্গীতের যে ধারাতেই মনোনিবেশ করেছেন সেটিই হয়ে উঠেছে স্বর্ণপ্রসূ। বাংলাদেশের সঙ্গীত নিয়েও তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে আমার আগ্রহটা বরাবরই ছিলো। কিছু করার
সুযোগটা সেভাবে হয়ে ওঠেনি। তবে সুযোগ পেলে বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আমার আছে। বিশেষ করে গানের অ্যালবাম ও চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার কাজটা আমি সহজেই করতে চাই। এছাড়া ওখানকার শিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালকদের সাথে আমাদের সঙ্গীত ভাবনার বিনিময় করার একটা সুপ্ত বাসনা আমার আছে। যা আমি বাংলাদেশ সফরের মধ্যদিয়ে করতে চাই।
https://www.youtube.com/watch?v=QmoiHqqpZkc
প্রাপ্তি ও অপূর্ণতা-
মধু মূখার্জী সমুদ্রের মত সুরের বিশালতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন ছাত্র জীবনেই। তখনই সিদ্ধান্ত নেন পেশাদার সঙ্গীতকার হবার। এ জীবনে অনেক বড় বড় শিল্পীদের সাথে কাজ করে তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ করেছেন তিলে তিলে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে বোম্বের হিন্দি ছবি ‘কাহেকাশান’-এ
আমি সঙ্গীত পরিচালনা করি সে ছবিতে গান গাওয়ার সুবাদে প্রথম আশা ভোঁসলের সাথে আমার দেখা এবং কথা হয়। গজল শিল্পী ভূপিন্দর সিং আশা জি’র বাসায় নিয়ে যান। সে সময় আশা জি তাঁর জন্য কিছু গজল তৈরি করতে বলেছিলেন আমাকে। পরে আশা ভোঁসলের ইচ্ছায় নজরুল সঙ্গীতের একটি
অ্যালবামের সঙ্গীতায়োজন করি। যা ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলো ঐ সময়। তারও আগে বাংলার খ্যাতনামা সঙ্গীতকার সলিল চৌধুরীর সহকারী হিসাবে কাজ করেছি দীর্ঘদিন। কলেজ জীবনের শুরুতেই মধু মুখার্জী কাজ করেন আনন্দ শংকরের অর্কেষ্ট্রা গ্রুপে প্রায় ৩ বছর।
তিনি বলেন, সেই গ্রুপে সব গুরুরা কাজ করতেন। ফলে সে অভিজ্ঞতাও আমাকে একটু একটু করে পূর্ণতা দিতে সাহায্য করেছে। এক কথায় যদি বলি শ্রেষ্ঠদের সাথে কাজ করলে তাঁদের শ্রেষ্ঠত্ব কী, তা বোঝা যায়। এরকম পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সাথে কাজ করতে গিয়েও কাজের পরিধি বেড়েছে। নিজের কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে মধু মুখার্জী বলেন, কোন কাজ আজো ঠিকভাবে করা হয়নি। লতা জি ও কিশোর কুমারের সাথে কাজ করতে পারিনি। এ আমার বড় অপূর্ণতা, অতৃপ্তি।
নচিকেতা ও হঠাৎ বৃষ্টি
অপ্রচলতি সুরের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ এক সঙ্গীতের ভাষা নির্মাণে নীরিক্ষাধর্মী সঙ্গীতও সৃষ্টি করেছেন মধু মুখার্জী। সুরের সাত রঙে ইচ্ছামত ছবি এঁকেছেন। দিন দিনে তিনি ঘূর্ণিবায়ুর মত ঊর্ধ্বপানে তেজস্বী
হয়ে ওঠেন। পশ্চিমবঙ্গের অডিও অ্যালবাম বিক্রির সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে নচিকেতাকে শ্রোতাদের মাঝে উপহার দেন মধু মুখার্জী। এ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের পরের কোন এক সময় নচিকেতাকে পাই। এমন গুণী মানুষ আমি কমই দেখেছি। ওঁর কথা সুর ও গায়কীর ভিন্নতা আমাকে
মোহিত করেছে। প্রথম যেদিন ও আমাকে গান শুনিয়েছিলো, সেদিনই বুঝেছি এ গান ‘অন্য গান’।

মধু মুখার্জী ও নচিকেতা
মধু মুখার্জী বলেন, সমসাময়িক সময়ের সংকট ও বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এ ভাবনা থেকেই ওঁর প্রথম অ্যাবামের কাজ করি। সুপার ডুপার হিট। এরপরে পরপর ৮টা অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা আমিই করি। সর্বশেষ গত বছর নচিকেতার রবীন্দ্র সঙ্গীতের অ্যালবাম ‘দৃষ্টিকোণ’-এর
কাজটিও আমি করি। বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় দুই বাংলার যৌথ ছবি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র কাজটি ছিলো মধু মুখার্জীর কাজের বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ঐ ছবির গানগুলোতে একাধিক ঘরাণার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে কাজ করতে হয়েছে। অনেক নীরিক্ষাধর্মী কাজ ছিলো সেটি।
নতুনদের নিয়ে কাজ ও পরামর্শ-
বাংলাদেশের নতুন শিল্পীদের নিয়ে আগামী ২-৩ মাসের মধ্যেই ৪ মাস ব্যাপী একটি মিউজিকের কোর্স পরিচালনা করার ব্যাপারে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের একটি আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়ে গেছে। প্রশিক্ষণে ভারতীয় ও পাশ্চাত্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, যন্ত্র সঙ্গীত পরিচালনা, কন্ঠ সঙ্গীত ও সঙ্গীত সৃষ্টির উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। যা থেকে নবীন শিল্পীরা কিছু জানতে ও শিখতে পারবে বলে জানালেন মধু মুখার্জী। তিনি নতুনদের শিকড়ের মত সঙ্গীতকে আকড়ে ধরে চর্চা চালিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, নিজেকেই নিজের পথটা খুঁজে নিতে হবে। সঙ্গীতে শর্ট-কাট বলে কোন কথা নেই। শৃঙ্খলা,
নিষ্ঠা আর একাগ্রতা নিয়ে চর্চা চালিয়ে গেলেই উপকৃত হওয়া যাবে বলে মনে করেন মধু মুখার্জী।
https://www.youtube.com/watch?v=kvmZ1h5jSS0
Dhaka Attack Unreleased Song
The Basics of Writing a Custom Research Paper
Study Managing
Amet amet dolore aliquam quiquia etincidunt.
How To Pick a Good Photo Editor
Board Portal Software for holding meetings distantly
Things to Consider When Writing a Research Paper
Ready to Go for Virtual Boardroom? Know this First!
Mail Order Brides to be
Custom Research Paper Mistakes
Latina Brides ᐈ Mail

কাজী শুভর গানে কলকাতার পল্লবী কর ও প্রেম কাজী (ভিডিও)

ভালোবাসা দিবসে দুই বাংলার মিশ্রণে ‘প্রাণের গীটার’

মাহফুজ ইমরানের এক বছরের সাধনার ফসল ‘প্রাণের গীটার’ (ভিডিও)

শাহজাহান শুভ’র ‘কথামালা’ গান অন্তর্জালে

শাকিব খানের কাছে ক্ষমা চাইলেন জায়েদ খান

রোহিঙ্গাদের নিয়ে গান গাইলো অবস্কিওর

প্রকাশ হলো ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির অরিজিত সিংয়ের সেই গান

শাকিরার নতুন মিউজিক ভিডিও ‘পেরো ফিয়েল’

তানজীব সারোয়ারের নতুন গান
