চোখের সামনেই সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়

সৃজনমিউজিক ডেস্ক :

নজরুলসংগীতশিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা। প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি গানের ভুবনে বিচরণ করছেন। নজরুলসংগীতের অসংখ্য গান তার কণ্ঠে শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। গান ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা হলো তার সঙ্গে
১৯৭১ প্রসঙ্গে…
সে সময় আমরা জয়পুরহাটে থাকতাম। আমার বাবা (ড. ফরিদ) মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন। এক সময় পাকসেনারা জানতে পেরে আমাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমার চোখের সামনেই আমাদের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে তিনবার আমাদের বাড়িতে আগুন দেয়া হয়।

যেভাবে আছি…
প্রায় দেড় মাস আগে হজ থেকে ফিরেছি। এখনো নতুন কোনো কাজের পরিকল্পনা করিনি। মূলত নতুন বছরে অসম্পূর্ণ কিছু কাজ শেষ করব বলে ঠিক করেছি। এ ছাড়া এখন পরিবারকেই সময় দিচ্ছি।

নজরুলের অ্যালবাম…
নজরুল সংগীতের একটি অ্যালবাম করছি। এরইমধ্যে ২-৩টি গানের কাজ শেষ করেছি। দীর্ঘদিন যাবত এই অ্যালবামে কাজ করলেও ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় এর কাজ শেষ করতে পারিনি। মেয়ে কানাডা চলে যাওয়ায় গান থেকে কিছুটা দূরে আছি। কারণ, গানের সঙ্গী মেয়েকে ছাড়া থাকতে আমার কষ্ট হয়।

এ প্রজন্মের কণ্ঠে নজরুল…
নজরুল আমাদের জাতীয় কবি। এ প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়ে নজরুলের গান করছে। এটি সুখকর একটি বিষয়। তাই সরকারের আরও বেশি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তবে দুখের বিষয় হচ্ছে, নজরুলকে বিশেষ কিছু দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নজরুলের সাহিত্য থেকে নাটক-চলচ্চিত্র নির্মিত হলে নতুন প্রজন্ম নজরুল সম্পকে জ্ঞান লাভ করতে পারত।

সংগীতের সঙ্গে বসবাস…
ছোটবেলা থেকেই আমার গানের সঙ্গে বসবাস শুরু হয়। আমার বাবা রবীন্দ্রসংগীত করতেন। তিনিই আমাকে নজরুল সংগীত করার জন্য উৎসাহ দেন। তবে সে সময় গানের জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমাদের পরিবার ছিল সৈয়দ পরিবার। সৈয়দ পরিবারের মেয়ে হয়ে গান করবে_ এটা সমাজের মানুষ সহজে মেনে নিতে পারেনি।

নতুন বছরে প্রত্যাশা…
সুন্দর একটি দেশ চাই। যেখানে আমাদের নতুন প্রজন্ম সুস্থভাবে বাঁচতে পারে। আমাদের এখনো অনেক মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন। কিন্তু তাদের পরিবারে অর্থকষ্ট। মুক্তিযোদ্ধাদের একটু ভালোভাবে বাঁচার অধিকার চাই। তাদের কারণেই আজ আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। আমাদের রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ভুলে যাচ্ছে।