বিনোদন
‘হীরক রাজা’ উৎপল দত্তের বাড়ি বরিশালে
Published
5 years agoon

সৃজনমিউজিক ডেস্ক :
বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে যেমন ছিলেন অপরিহার্য, তেমনি তিনি ছিলেন মঞ্চের শক্তিমান অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্যকার। একটা সময় গেছে, যখন শক্তিশালী এ অভিনেতা শাসন করতেন ওপার বাংলা চলচ্চিত্রকে। যে মানুষটি হয়েছিলেন ‘হীরক রাজার দেশে’র রাজা, তিনিই আবার হলেন ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র হোসেন মিয়া। এমন কত বিখ্যাত চরিত্র তাঁর জীবনে—‘জয়বাবা ফেলুনাথ’-এর মেঘরাজ, ‘আগন্তুক’-এর মনোমোহন মিত্র, ‘অমানুষ’-এর মহিম ঘোষাল, ‘জন অরণ্যে’র বিশুদা—এমন কত চরিত্রেই না অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি। ‘হীরক রাজার দেশে’র তাঁর সংলাপগুলো রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে গেছে।
অথচ এ মানুষটি নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি শিল্পী নই। নাট্যকার বা অন্য যেকোনো আখ্যা লোকে আমাকে দিতে পারে। তবে আমি মনে করি আমি প্রপাগান্ডিস্ট। এটাই আমার মূল পরিচয়।’ শুধু কি তা-ই, পদ্মভূষণ উপাধি ও সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার মতো ঘটনা তাঁর জীবনে আছে।
তাঁর বেশভূষাই অন্য রকম ছিল। পর্দায় বেশির ভাগ সময়ে চোখ বড় বড় করে কথা বলতেন। ১৯২৯ সালের ২৯ মার্চ বাংলাদেশের বরিশালে তাঁর জন্ম। বাবা গিরিজা রঞ্জন দত্ত ও মা শৈল বালা দত্ত। বিচিত্র প্রতিভার মানুষটির আজ চলে যাওয়ার দিন। ১৯৯৩ সালের ১৯ আগস্ট কলকাতায় উৎপল দত্ত মারা যান। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ করি তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনে কিছুটা।
সত্যজিৎ রায়ের ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবির শুটিংয়ে মগনলাল মেঘরাজবেশী উৎপল দত্ত ছিলেন মেধাবী ছাত্র শিলংয়ে এডমন্ডস স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু। সেখান থেকে কলকাতার সেন্ট লরেন্স স্কুল হয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ১৯৪৮ সালে ইংরেজি বিষয়ে কলেজের ছাত্রদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে বিএ পাস করেন উৎপল এবং ১৯৪৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ইংরেজি অনার্সে তাঁর স্থান ছিল পঞ্চম।

অভিনেতা উৎপল দত্ত
ছাত্র অবস্থাতেই মঞ্চ নাটকের জগতে তাঁর যাত্রা শুরু। প্রথম আশ্রয় শেক্সপিয়ারে। প্রথম অভিনয় করেন উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘হ্যামলেট’ নাটকে। তিনি শেক্সপিয়ার আন্তর্জাতিক থিয়েটার কোম্পানির সঙ্গে ভ্রমণ করেছেন বেশ কয়েকবার। ১৯৪৭ সালে লিটল থিয়েটার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে শুরুতে খানিকটা হোঁচট খান। শেক্সপিয়ার, বার্নাড শ, ক্লিফর্ড ওডেটস প্রমুখের নাটক ইংরেজিতে প্রযোজনা করে দর্শক আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হন। তাই লিটল থিয়েটার গ্রুপকে (এলটিজি) বাংলা প্রযোজনার দিকে পরিচালিত করেন। তাঁর পরিচালিত এ গ্রুপের উল্লেখযোগ্য নাটক হলো ‘ওথেলো’, ‘নিচের মহল’, ‘ম্যাকবেথ’, গিরিশ ঘোষের ‘সিরাজউদ্দৌলা’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তপতী’, ‘অচলায়তন’ এবং মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘প্রহসন বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ ইত্যাদি। ১৯৭১ ‘পিএলটি’ অর্থাৎ ‘পিপলস লিটল থিয়েটার’ নামে আরেকটি নাট্যদল গঠন করেন। নিজের নির্দেশিত ও লেখা প্রায় প্রতিটি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন।
নাট্যবিষয়ক বহু প্রবন্ধ ও একাধিক গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। বাংলায় অনুবাদ করেছেন বেশ কিছু বিদেশি ভাষার নাটক। শেক্সপিয়ারের ‘সমাজচেতনা’ তাঁর লেখা গুরুত্বপূর্ণ এক গ্রন্থ। তিনি দীর্ঘকাল ধরে এপিক থিয়েটার নামক একটি সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন এবং দেশ-বিদেশের নাট্যবিষয়ক বহু সভা-সেমিনারেও অংশগ্রহণ করেছেন।
একসময় বড় পর্দায় নিয়মিত এবং অপরিহার্য হয়ে ওঠেন উৎপল দত্ত। চেহারা, বেশভূষার কারণে বাণিজ্যিক ছবিতে মূলত নেতিবাচক চরিত্রেই দর্শক গ্রহণ করে তাঁকে। বড় পর্দার বড় অভিনেতা হতে বেশি দিন লাগেনি। হিন্দি ও বাংলা বাণিজ্যিক ছবিতেও তিনি ছিলেন দারুণ জনপ্রিয়। ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘আগমন’, ‘আনন্দ আশ্রম’, ‘অমানুষ’, ‘গুড্ডি’, ‘শৌখিন’, ‘বারসাত কি এক রাত’, ‘চৌরঙ্গি’, ‘শেষ অঙ্ক’, ‘ইনকিলাব’, ‘কিসিসে না কেহনা’, ‘হামারি বহু অলকা’, ‘প্রিয়তমা’, ‘আপনে পারায়ে’, ‘জুলি’, ‘দ্য গ্রেট গ্যাম্বলার’, ইত্যাদি অসংখ্য হিন্দি ও বাংলা ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন এই অভিনেতা। নিজের নামের সঙ্গে সুবিচার করেছেন বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘অবিচার’-এ খলচরিত্রে। ‘দেখলে কেমন তুমি খেল’ গানের সঙ্গে দুর্দান্ত অভিনয় দর্শক মনে রাখবে আরও অনেক অনেক বছর। গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবিতে হোসেন মিয়ার চরিত্রটিতে কি সাবলীল ছিলেন তিনি! দারুণ অভিনয় করেছেন ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি তক্ক আর গপ্প’, সত্যজিৎ রায়ের ‘জন অরণ্য’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এ। ‘হীরক রাজার দেশে’ তাঁর চরিত্র ও সংলাপগুলো এখনো দর্শকেরা চর্চা করেন। কৌতুক অভিনেতা হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। হিন্দি ছবি ‘গোলমাল’ তাঁর ভবানী শংকর চরিত্রে অভিনয় দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে।
রাজনৈতিক দর্শনের দিক থেকে তিনি ছিলেন বামপন্থী ও মার্ক্সবাদীয়। তাঁর মানুষ-সংক্রান্ত চেতনা শ্রেণিসমাজের বাস্তব চেতনাকেই ধারণ করে। সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদী মানুষ সম্পর্কে তাঁর গভীরতম ধারণা তাঁর নাটকগুলোকে সফল করেছে। উৎপল দত্ত ছিলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সমর্থক। তিনি উন্মুক্ত মঞ্চ ও পথনাটক আন্দোলনের সক্রিয় উদ্যোক্তা ছিলেন। ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় নৌবাহিনীর বিদ্রোহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি ‘কল্লোল’ নামে নাটক লেখেন। নাটকটির মাধ্যমে গণবিদ্রোহকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, এই অভিযোগে কংগ্রেস সরকারের কোপানলে পড়ে তাঁকে জেলে যেতে হয় ১৯৬৫ সালে। বেশ কয়েক মাসের কারাবাস হয় তাঁর। কারাবন্দী অবস্থাতেও নাটক লেখা চালিয়ে যান তিনি।
উৎপল দত্ত ১৯৬০ সালে প্রখ্যাত অভিনেত্রী ফরিদপুরের মেয়ে শোভা সেনকে বিয়ে করেন। শোভা সেন (৯৫) গত রোববার কলকাতার নিজ বাসভবনে মারা গেছেন।
সূত্র: বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্রিকা।
You may like
Dhaka Attack Unreleased Song
The Basics of Writing a Custom Research Paper
Study Managing
Amet amet dolore aliquam quiquia etincidunt.
How To Pick a Good Photo Editor
Board Portal Software for holding meetings distantly
Things to Consider When Writing a Research Paper
Ready to Go for Virtual Boardroom? Know this First!
Mail Order Brides to be
Custom Research Paper Mistakes
Latina Brides ᐈ Mail

কাজী শুভর গানে কলকাতার পল্লবী কর ও প্রেম কাজী (ভিডিও)

ভালোবাসা দিবসে দুই বাংলার মিশ্রণে ‘প্রাণের গীটার’

মাহফুজ ইমরানের এক বছরের সাধনার ফসল ‘প্রাণের গীটার’ (ভিডিও)

শাহজাহান শুভ’র ‘কথামালা’ গান অন্তর্জালে

শাকিব খানের কাছে ক্ষমা চাইলেন জায়েদ খান

রোহিঙ্গাদের নিয়ে গান গাইলো অবস্কিওর

প্রকাশ হলো ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির অরিজিত সিংয়ের সেই গান

শাকিরার নতুন মিউজিক ভিডিও ‘পেরো ফিয়েল’

তানজীব সারোয়ারের নতুন গান
