অন্য মিডিয়া
১৭ জন শিল্পী একত্রে দেশ ছেড়েছিলাম
Published
4 years agoon

- সৃজন মিউজিক ডেস্ক :
সম্প্রতি একুশে পদকপ্রাপ্তিতে ভীষণ উচ্ছ্বসিত এবং আনন্দিত শাহীন সামাদ। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু অনুভূতি মানুষ ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না। তারপরও বলছি, সন্দেহাতীতভাবেই একজন শিল্পীর একুশে পদক অর্জন অনেক সম্মানের ও গর্বের। কারণ এ পদক অর্জনের জন্য যেকোনো শিল্পীকেই তার সর্বোচ্চটা দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হয়। তাছাড়া যথাযথভাবে বিবেচনা করেই নানা ক্ষেত্রের মানুষকে এ পদক প্রদান করা হয়ে থাকে। এই পুরস্কার এখন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অলংকার। এই অলংকারের মান আমি আজীবন ধরে রাখতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে সুস্থ থাকি, ভালো থাকি।’
শাহীন সামাদের সংগীতে রয়েছে এক সংগ্রাম মুখরিত জীবনের গল্প। মাত্র ১৮ বছর বয়সে গানের নেশায় রাজপথে নেমেছিলেন। ১৯৭১ সালে ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’র হয়ে শরণার্থী শিবির ও মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে প্রতিবাদী গান গেয়ে সবার মাঝে দেশাত্মবোধ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কখনোই কোনো প্রাপ্তির আশায় কাজ করেননি তিনি। শাহীন সামাদ বলেন, ‘আমি কখনোই প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব করে গান করিনি।
গানকে ভালোবেসে গান করেছি। তবে গান গেয়ে মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। তাছাড়া সংগীত সাধনা করেই তো জীবনের যত যশ, খ্যাতি, সুনাম ও পরিচিতি কুঁড়িয়েছি। এককথায় সংগীতজীবন নিয়ে আমি তৃপ্ত।’
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সময়গুলো নিয়ে স্মতিচারণ করতে গিয়ে শাহীন সামাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’র হয়ে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান করে চলছি। ঠিক সেই সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আমাদের ডাক আসে। আমরা সেখানে গিয়ে শুরুতে ৬টি গান গেয়ে আসি। এরপরে টালিগঞ্জ টেকনিশিয়ান স্টুডিও থেকে আরও ১৪টি গান রেকর্ড করে স্বাধীন বাংলা বেতারে পাঠাই। এটি ১৯৭১ সালের জুন-জুলাইয়ের দিকের কথা। সেই সময় আমাদের কণ্ঠে ‘জনতার সংগ্রাম চলবেই’, ‘শিকল পড়ার ছল’, ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’, ‘একি অপরূপ রূপে মা তোমায়’, ‘খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’, ‘বাংলা মা দুর্নিবার’, ‘মানুষ হ মানুষ হ’, ‘ফুল খেলিবার দিন নয়’, ‘দেশে দেশে গান গাহি’, ‘বল বলরে সবে পাক পশুদের মারতে হবে’, ‘শুনেন শুনেন ভাই সবে’, ‘ব্যারিকেড বেয়োনেট’, ‘প্রদীপ নিভিয়ে দাও’ শীর্ষক গানগুলো শোনা গেছে।
শাহীন সামাদ বলেন, ‘১৯৬৬ সালে আমি ছায়ানটে যোগ দিয়েছিলাম। সেখান থেকেই বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমার সঙ্গে ছায়ানটের সব শিল্পীরাই তখন গান করতেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ও আমরা রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এরপর এল ১৯৭১।
তখন আমার বয়স ১৮ বছর। কলেজে পড়ি। থাকতাম লালবাগে। আমাদের বাড়ির উল্টো পাশেই পাকবাহিনীর ক্যাম্প ছিল। আমরা তিন ভাই তিন বোন। অনেক ভয়ের মধ্যে আমাদের সময় কাটত। কারণ তারা তরুণ ছেলেমেয়েদের দেখলেই হিংস্র বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ত। ভয়ে ঘর থেকে কেউ বের হতাম না। পাক-বাহিনীরা রাস্তায় ট্যাংক দিয়ে মহড়া দিত। ভয়ে পুরো এলাকা থমথম হয়ে গিয়েছিল। অনেকটাই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলাম। লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে ছায়ানটে যেতে হতো। তাও খুব বেশি যাওয়ার সুযোগ পেতাম না।
১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল কলকাতার উদ্দেশে রওনা হই। অনেকটা লুকিয়ে লুকিয়ে দেশত্যাগ করতে হয়েছে। আমি শৈশব থেকেই গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সে কারণে গানের মাধ্যমেই যুদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। দীর্ঘ সময় পশ্চিমবঙ্গে ছিলাম। তবে স্বাধীনতার মাস দুয়েক পর দেশে ফিরে আসি। কলকাতায় থাকাকালীন পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। তবে শুনেছি, পাকসেনারা আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের পরিবারের সবাই পালিয়ে ছিলেন। আমি জানতাম না, আমার পরিবারের লোকজন কেমন আছে, কোথায় আছে? আর তারাও জানত না, আমি বেঁচে আছি, না মরে গেছি। আমরা ১৭ জন শিল্পী একত্রে দেশ ছেড়ে কলকাতায় গিয়েছিলাম।
ওপার বাংলায় আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান লেখক-সাংবাদিক দীপেন বন্দোপাধ্যায়। আমরা তার বাসায় উঠি। তিনি তখন ১৪৪নং লেনিন সরণীর একটি দোতলা বাড়িতে থাকতেন। বাড়িটার নিচের তলায় আমাদের থাকার জায়গা হলো। এ সময় আমার সঙ্গে আরও ছিলেন সনজিদা খাতুন, ওয়াহিদুল হক, সৈয়দ হাসান ইমাম, মুস্তফা মনোয়ার, আলী যাকের, তারেক আলি, আসাদুজ্জামান নূর, ইনামুল হক, বিপুল ভট্টাচার্য, মোর্শাদ আলি, ডালিয়া নওয়াজ ও দেবু চৌধুরী। আমরা সবাই মরহুম শেখ লুত্ফর রহমান (গণসংগীতের সম্রাট নামেই সবাই যাকে চেনে), আলতাফ মাহমুদ এবং পটুয়া কামরুল হাসানের কাছে গান শিখতাম। একসময় সবাই মিলেই গঠন করলাম ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’। শুরুতে এই শিল্পী সংস্থায় আমরা ১৭ জনই ছিলাম। এরপর একে একে যোগ দেন আরও অনেক শিল্পী। শেষ পর্যন্ত আমাদের সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১১৭ জনে।
যাই হোক ১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকেই নানা মানুষের মুখে শুনতে থাকি, দেশ স্বাধীন হয়েছে। তবে দুপুরের দিকে স্বাধীন হওয়ার সংবাদটি নিশ্চিত হই। সে সময়ের আনন্দের কথা বলে বোঝানো যাবে না। বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। যার যতটুকু সামর্থ্য ছিল তাই দিয়ে একে অপরকে মিষ্টিমুখ করিয়েছি। বিজয়ের উল্লাসে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ-উল্লাস করেছি। বিজয়ের আনন্দে কেঁদেছিও। আমাদের সঙ্গে সেই সময় যোগ দিয়েছিল কলকাতার অনেক বাঙালিরাও। আমার মনে আছে, বিজয়ের আনন্দে আমি কলকাতার গড়িয়াহাট থেকে ১০ টাকা দিয়ে একটা শাড়ি কিনেছিলাম।’
সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
You may like
Dhaka Attack Unreleased Song
The Basics of Writing a Custom Research Paper
Study Managing
Amet amet dolore aliquam quiquia etincidunt.
How To Pick a Good Photo Editor
Board Portal Software for holding meetings distantly
Things to Consider When Writing a Research Paper
Ready to Go for Virtual Boardroom? Know this First!
Mail Order Brides to be
Custom Research Paper Mistakes
Latina Brides ᐈ Mail

কাজী শুভর গানে কলকাতার পল্লবী কর ও প্রেম কাজী (ভিডিও)

ভালোবাসা দিবসে দুই বাংলার মিশ্রণে ‘প্রাণের গীটার’

মাহফুজ ইমরানের এক বছরের সাধনার ফসল ‘প্রাণের গীটার’ (ভিডিও)

শাহজাহান শুভ’র ‘কথামালা’ গান অন্তর্জালে

শাকিব খানের কাছে ক্ষমা চাইলেন জায়েদ খান

রোহিঙ্গাদের নিয়ে গান গাইলো অবস্কিওর

প্রকাশ হলো ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির অরিজিত সিংয়ের সেই গান

শাকিরার নতুন মিউজিক ভিডিও ‘পেরো ফিয়েল’

তানজীব সারোয়ারের নতুন গান
