সঙ্গীত বিকাশে ফেরদৌসী রহমানের নতুন উদ্যোগ

• সৃজন মিউজিক প্রতিবেদক

বরেণ্য পল্লীগীতি সম্রাজ্ঞী ফেরদৌসী রহমান সঙ্গীত বিকাশে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন। তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘আব্বাস উদ্দিন সঙ্গীত একাডেমি’র কয়েকটি শাখা খোলার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। রাজধানী ঢাকার বিশেষ কয়েকটি স্থানে শাখাগুলো খুলতে চাইছেন। বর্তমান প্রজন্মের উদীয়মান শিল্পীদের মাঝে পল্লীগীতি, দেশাত্মবোধক, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত, ভাটিয়ালি, লোক ও আধুনিক গানের মূর্ছনা ছড়িয়ে দিতে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পিতার নামে সঙ্গীত একাডেমির শাখা খোলার বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা করে আসছেন। এখন তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ রয়েছেন। তাই আপাতত সঙ্গীতবিষয়ক সব ধরনের কাজ থেকে বিরত রয়েছেন। তবে সঙ্গীত জীবনে এ পর্যায়ে এসে তার এই পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে ফেরদৌসী রহমান বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক প্রতিভাধর ও আগ্রহী শিল্পী রয়েছেন, যারা সুযোগ ও পরিচর্যার অভাবে এগোতে পারছে না। এছাড়া আমাদের দেশে মানুষের তুলনায় এখনো এতটা সঙ্গীত একাডেমি গড়ে ওঠেনি। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকাতেও না। সেই চিন্তা থেকে ঢাকার কয়েকটি জায়গায় ‘আব্বাস উদ্দিন সঙ্গীত একাডেমি’র শাখার খোলার পরিকল্পনা করেছি। যেখানে বিভিন্ন ঘরানার সঙ্গীতের পাশাপাশি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীত শেখানো হবে। এ উদ্যোগে অনেকেই আমাকে বেশ অনুপ্রাণিত করছে।’

এছাড়া ফেরদৌসী রহমান তার কণ্ঠের পুরনো দিনের জনপ্রিয় কিছু গান নিয়ে একটি অ্যালবামের কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি গান নির্বাচনের কাজ শুরু করেছেন। এগুলো হচ্ছে- ‘যে জন প্রেমের ভাব জানে না’, ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘পদ্মার ঢেউরে’, ‘মনে যে লাগে এতো রঙ’, ‘নিশি জাগা চাঁদ’, ‘আমি রুপনগরের রাজকন্যা’, ‘ঝরা বকুলের সাথী আমি’, ‘হার কালা করলাম রে’, ‘গহিন গাঙের নাইয়া’, ‘আমার প্রাণের ব্যথা কে বুঝে সই’ প্রভৃতি। কিছুদিনের মধ্যে এর কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে ফেরদৌসী রহমান বলেন, ‘এটা আমার দীর্ঘদিনের একটি পরিকল্পনা বটে। আমার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলো বিভিন্ন রিয়েলিটি শোতে এ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের গাইতে দেখে অবিভ‚ত হই। এছাড়া বিবর্তনের হাত ধরে মানুষ ঘুরেফিরে বাংলা গানের মূল জায়গায় আসবে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাই বাংলা গানের ঐতিহ্যকে এ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে এ উদ্যোগটা নিয়েছি। এখন শ্রোতাদের কাছে গানগুলো পৌঁছাতে পারলেই আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে।’

উল্লেখ্য, ফেরদৌসী রহমানের হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের গান প্রাণ পেয়েছিল। ১৯৫৯-১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি চলচ্চিত্রে বিরতিহীনভাবে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান গেয়েছেন। তাই ফেরদৌসী রহমানের গান বাংলা চলচ্চিত্রে অনিবার্য হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল । এজন্য সঙ্গীত ভুবনের কিংবদন্তি এই শিল্পী অসংখ্য পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন। সর্বশেষ গত বছর দশম ‘চ্যানেল আই-সিটিসেল অ্যাওয়ার্ডে’ তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।